মুশকিল আসান হাইকোর্ট ; ২০জন শিক্ষককে চাকরিতে ফেরার নির্দেশ

এষণা কুন্ডু , নিউজ ডেস্ক ; স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে যে জট তৈরি.....

Difficult situation: High Court orders 20 teachers to return to work
Difficult situation: High Court orders 20 teachers to return to work

এষণা কুন্ডু , নিউজ ডেস্ক ; স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে যে জট তৈরি হয়েছে, সেই অবস্থায় চাকরি হারানো ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য বড় স্বস্তির বার্তা দিল কলকাতা হাই কোর্ট। দীর্ঘ টানাপড়েন ও প্রশাসনিক অনীহা সত্ত্বেও মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন—অবিলম্বে আবেদনকারীদের উচ্চ-প্রাথমিকে (Upper Primary) যোগদানের সুযোগ করে দিতে হবে। আদালত জানায়, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, যা কমিশনকে অনুসরণ করতেই হবে।

ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের সময়ে। আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী জানান, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলার ২০ জন চাকরিপ্রার্থী প্রথমে উচ্চ-প্রাথমিকে শিক্ষকতার জন্য নিয়োগপত্র পান। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁরা ২০১৬ সালের এসএসসি-র নবম-দশমের শিক্ষক পদে চাকরি পেয়ে যান। ফলে উচ্চ-প্রাথমিকে যোগদানের নিয়োগপত্র তাঁরা গ্রহণ করেননি।

এরপর নবম-দশমের চাকরিতে দুর্নীতি, বেআইনি প্যানেল, ভুলভ্রান্তি ঘিরে বিতর্ক চরমে উঠতেই আবেদনকারীরা পুরনো, অর্থাৎ উচ্চ-প্রাথমিকে ফেরার সুযোগ চান। কমিশনের কাছে তাঁরা আবেদন জানান—আগের বৈধ প্যানেল অনুযায়ী যোগদানের অনুমতি দেওয়া হোক। কিন্তু এসএসসি তাঁদের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেয়।

কমিশনের যুক্তি ছিল—নিয়োগপত্র ইস্যুর ৯০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ায় তা আর বৈধ নয়। ফলে ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ’ নিয়োগে তাঁরা ফিরে যেতে পারবেন না। কমিশনের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নিয়োগের সুযোগ বাড়ানোর প্রশ্নই আসে না।

কিন্তু আবেদনকারীদের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাঁদের দাবি—শুধু হাই কোর্টই নয়, সুপ্রিম কোর্টেরও বহু নির্দেশে বলা হয়েছে যে, যে কোনও প্রার্থী যদি বৈধ কোনও চাকরি না পান অথবা পরবর্তী নিয়োগ বিতর্কিত হয়ে যায়, তবে আগের বৈধ চাকরিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। তাঁদের আইনজীবীর দাবি, বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য আগেই কমিশনকে আবেদন পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু কমিশন সেই নির্দেশ মানেনি।

অবশেষে বিচারপতি অমৃতা সিনহার আদালত কমিশনের যুক্তিকে গুরুত্ব দেয়নি। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে—যে পরিস্থিতিতে বিতর্কিত নবম-দশমের চাকরি কার্যত বাতিল হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে আবেদনকারীরা যেন তাঁদের পূর্বের উচ্চ-প্রাথমিকের বৈধ চাকরিতে যোগ দিতে পারেন, সেই সুযোগ দিতে হবে। উচ্চ আদালত জানিয়েছে, নিয়োগপত্রের ৯০ দিনের সময়সীমা সেই পরিস্থিতির জন্য যেখানে প্রার্থী স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রার্থীরা বাধ্য হয়ে বিতর্কিত চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন, পরে তা অবৈধ ঘোষণা হওয়ায় আগের চাকরিতে ফেরাটা তাঁদের ‘অধিকার’।

রায়ের ফলে দীর্ঘদিন অন্যায়ের প্রতিবাদে লড়াই করে যাওয়া ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা স্বস্তির হাসি ফিরে পেলেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এসএসসিকে দ্রুত তাঁদের উচ্চ-প্রাথমিকে যোগদানের অনুমতি দিতে হবে।

এখন প্রশ্ন—কমিশন আদৌ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে কি না। সূত্রের খবর, আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় কমিশনের সামনে এখন আর বিকল্প নেই। তবে এই রায় ভবিষ্যতে একই ধরনের বহু মামলার দিক নির্দেশনা হিসেবেও কাজ করবে বলে মনে করছেন আইনি মহলের একাংশ।

Thank You for Reading – Political Daily

Thank you for taking the time to read our news at Political Daily.
We appreciate your trust in our platform as your source for reliable and timely Indian news.Your support encourages us to continue delivering accurate, unbiased, and impactful stories that matter to you.

Stay informed. Stay connected.
– Political Daily