এষণা কুন্ডু , পলিটিক্যাল ডেস্ক : ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া বা SIR (Special Intensive Revision) চালু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্ক সামনে আসছে। এবার হুগলির উত্তরপাড়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। অভিযোগ, শাসক দলের “বাংলার ভোট রক্ষা শিবিরে” স্থানীয় কাউন্সিলার, শহর তৃণমূল সভাপতি এবং BLO (Booth Level Officer)–দের নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
বিজেপির দাবি, নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে সরকারি কর্মীদের রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে । স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।
বিজেপির অভিযোগে বলা হয়েছে,
“SIR প্রক্রিয়ার সময় শাসক দলের ক্যাম্পে BLO দের ডেকে ভোটার তালিকা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এতে প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
কাউন্সিলারের অস্বীকার
অভিযোগের কেন্দ্রে থাকা তৃণমূল কাউন্সিলার মৌসুমী বিশ্বাস অবশ্য অভিযোগটি একেবারেই অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য,
“BLO দের ডাকা হয়নি। বরং তারাই আমাদের ক্যাম্পে এসেছিলেন এলাকার ঠিকানা যাচাই করতে। আমরা শুধু সহযোগিতা করেছি, কোনও রাজনৈতিক বৈঠক হয়নি।”
তিনি আরও বলেন,
“‘বাংলার ভোট রক্ষা শিবির’ আসলে সাধারণ নাগরিকদের ভোটার সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ। এটি রাজনৈতিক নয়, সামাজিক প্রয়াস।”
BLO–র বক্তব্য
অন্যদিকে ওই ওয়ার্ডের এক BLO বলেন, কাজ করতে গিয়ে তাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে।
“একজনের পক্ষে পুরো ওয়ার্ডের প্রতিটি রাস্তা জানা সম্ভব নয়। অনেক সময় স্থানীয় লোকদের সহায়তা নিতে হয়,”— তাঁর মন্তব্য।
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
শহর তৃণমূল সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বিজেপির অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ বলে কটাক্ষ করেন।
তিনি বলেন – “বিজেপি এমন আচরণ করছে যেন তৃণমূল ছোঁয়াচে! BLO দের সঙ্গে কথা বললেই ওদের সমস্যা। আমরা কিছু বেআইনি করিনি,”
তাঁর দাবি, বিজেপি মানুষের সমর্থন হারিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
“SIR হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের কাজ, ওরা চাইলে তদন্ত করুক। আমাদের লুকোনোর কিছু নেই,”— যোগ করেন তৃণমূল সভাপতি।
বিজেপির পাল্টা সওয়াল
অন্যদিকে বিজেপির উত্তরপাড়া নেতৃত্বের বক্তব্য,
“যদি BLO রা শুধু ঠিকানা জানতে যান, তাহলে সেটা তৃণমূলের ক্যাম্পে কেন হবে? সরকারি কাজ সরকারি দপ্তরেই হওয়া উচিত।”
তাদের দাবি, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা রক্ষার স্বার্থে জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত তদন্তে নামতে হবে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই SIR প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে,
“ভোটার তালিকা সংশোধনের মতো প্রশাসনিক কাজও এখন তীব্র রাজনৈতিক সন্দেহের ছায়ায় ঢেকে গেছে।”















