অশ্লীল পোস্টার কান্ডে অস্বস্তিতে তৃণমূল, আলোচনায় সংখ্য়ালঘু নেতা

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এক দাপুটে সংখ্যালঘু তৃণমূল নেতার অশ্লীল পোস্টার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার সকালে দেগঙ্গা থানার অন্তর্গত.....

The Trinamool Congress is in an awkward position over the obscene poster incident, and a minority leader is at the center of the discussion.
The Trinamool Congress is in an awkward position over the obscene poster incident, and a minority leader is at the center of the discussion.

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এক দাপুটে সংখ্যালঘু তৃণমূল নেতার অশ্লীল পোস্টার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার সকালে দেগঙ্গা থানার অন্তর্গত হাদিপুর সিনিয়র মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় প্রথম ওই পোস্টার নজরে আসে। মুহূর্তের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেগঙ্গা জুড়ে। মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেই পোস্টারের ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বসিরহাট, বাদুড়িয়া, হিঙ্গলগঞ্জ, স্বরূপনগর, হাড়োয়া, মিনাখাঁ ও সন্দেশখালি সহ জেলার একাধিক সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়।

পোস্টারে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি আর কেউ নন—উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী সংখ্যালঘু নেতা এ কে এম ফরহাদ। উল্লেখ্য, প্রায় দু’বছর আগেও তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদে ছিলেন। সেই কারণে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরমহলে তীব্র অস্বস্তি ও জল্পনা শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুধু হাদিপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকাতেই নয়, দেগঙ্গার আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ওই পোস্টার লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পোস্টারে ফরহাদের একটি অশ্লীল ছবি থাকার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও কিছু আপত্তিকর মন্তব্য লেখা রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু’বছর আগে এ কে এম ফরহাদের একটি অশ্লীল ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। সেই ঘটনার জেরে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় তাঁকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে বসিরহাট উত্তরের প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আব্দুল্লাহকে ওই পদে বসানো হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই জেলা রাজনীতিতে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন ফরহাদ।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে আবারও তিনি ধীরে ধীরে সক্রিয় হচ্ছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা এডুকেশন কমিটির সদস্য করা হয়েছে। জেলা রাজনীতিতে তাঁর পুনরাবির্ভাবকে ঘিরে একাংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। অনেকের মতে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার লড়াই থেকেই এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে এ কে এম ফরহাদ বলেন,
“পুরনো ছবি ব্যবহার করে আমার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি এসব ষড়যন্ত্রে ভয় পাই না। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করতে এসব করা হচ্ছে, কিন্তু এতে কোনও লাভ হবে না।”

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তদন্তে নেমেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। কারা বা কোন উদ্দেশ্যে ওই পোস্টার লাগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনের ভিতরে বা আশপাশে এই ধরনের পোস্টার লাগানোর পিছনে কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তাও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের মতে, ফরহাদের রাজনৈতিক পুনরুত্থান ঠেকাতেই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

সব মিলিয়ে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত উত্তর ২৪ পরগনায় এই অশ্লীল পোস্টার কাণ্ড নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা উসকে দিল। তদন্তের অগ্রগতির দিকেই এখন নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের।

Thank You for Reading – Political Daily

Thank you for taking the time to read our news at Political Daily.
We appreciate your trust in our platform as your source for reliable and timely Indian news.Your support encourages us to continue delivering accurate, unbiased, and impactful stories that matter to you.

Stay informed. Stay connected.
– Political Daily