এষণা কুন্ডু , পলিটিক্যাল ডেস্ক ; বিধানসভা নির্বাচনের এখনও বেশ কিছুটা সময় বাকি থাকলেও রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা এলাকা। বিজেপির এক সহকারী বুথ সভাপতিকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার অন্তর্গত গোপালপুর পঞ্চায়েতের ধর্মতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
আহত বিজেপি নেতার নাম শঙ্কর মণ্ডল। তিনি বিজেপির সহকারী বুথ সভাপতি। ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে ধর্মতলা গ্রামে বিজেপির একটি দলীয় বৈঠক করেন শঙ্কর মণ্ডল। সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তাঁর বচসা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে তিনি আবার ওই এলাকায় যান। তখন ফের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় জনাকয়েক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী কোদালের বাঁট নিয়ে শঙ্কর মণ্ডলের উপর হামলা চালায়। তাঁকে বেধড়ক মারধর করে মাঠের মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের সদস্য ও বিজেপির স্থানীয় কর্মী-সমর্থকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শঙ্কর মণ্ডলকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন। দ্রুত তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সঞ্জয় নায়েক বলেন, “ক্যানিং পশ্চিমের ২ নম্বর মণ্ডলের সহকারী সভাপতি শঙ্কর মণ্ডলকে কোদালের বাঁট দিয়ে নৃশংসভাবে মারধর করা হয়েছে। তাঁকে মরণাপন্ন অবস্থায় মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে পুরো ঘটনা জানিয়ে উপযুক্ত তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি জেলা ও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকেও বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রাম দাস। তিনি বলেন, “এই গোটা ঘটনাটাই সাজানো ও মিথ্যা। বিজেপির পায়ের তলায় মাটি নেই বলেই ভোটের আগে এ ধরনের অভিযোগ তুলে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। এটি কোনও রাজনৈতিক ঘটনা নয়। পারিবারিক বা নিজেদের দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকেই কিছু একটা ঘটতে পারে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে—কিছু হলেই তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করা।”
এদিকে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আহত বিজেপি নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যানিং পশ্চিমে রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। বিজেপি নেতৃত্ব এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হিংসা বলে দাবি করলেও শাসক দলের পক্ষ থেকে তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। তদন্তের পরই ঘটনার প্রকৃত সত্য সামনে আসবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।















