এষণা কুন্ডু,নিউজ ডেস্ক ; হুগলী জেলার চাঁপদানী বিধানসভার ১১১ নম্বর বুথের বিএলও লালু নিয়াকে বৈঠকে সপাটে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে এআইআরও অভিজিত দাসের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই বিএলও-দের উপর অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অস্বাভাবিক কাজের দায়িত্ব ও নানা অপব্যবহারের অভিযোগ উঠছিল। তার মাঝেই এই ঘটনার প্রকাশ্যে আসায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে শিক্ষা মহলে ও বিএলও মহলে।
লালু নিয়া পেশায় শিক্ষক—বৈদ্যবাটি কল্পনা বসু বয়েজ একাডেমি স্কুলের। অভিযোগ, দু’দিন আগে শ্রীরামপুর মহকুমা শাসক দপ্তরে বিএলও-দের নিয়ে এক বৈঠকে উপস্থিত সকলের সামনে তাঁকে চড় মারেন এআইআরও অভিজিৎ দাস। সূত্রের খবর, ওই বুথে এসআইআর কাজের সময় কয়েকজন ভোটারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী নিখোঁজ ভোটারদের তালিকা সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাবলিক নোটিশ আকারে ঝুলিয়ে দেন বিএলও, যেখানে তিনি নিজের মোবাইল নম্বরও লিখে দেন যাতে ভোটাররা যোগাযোগ করতে পারেন।
সেই নোটিশের কথা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই খবরই নাকি ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কমিশনের এক আধিকারিকের কাছে।
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্যরা দেখা করেন ওই শিক্ষকের সঙ্গে। তাঁরা জানান, রাজ্যজুড়ে বিএলও-দের উপর অস্বাভাবিক মানসিক চাপ, হুমকি ও অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপানো হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরেই কমিশন অফিসের সামনে আন্দোলন চলছে।
শিক্ষক নেতা শুভেন্দু গড়াই বলেন, “একটা রিপোর্ট সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সেই কারণেই সবার সামনে একজন হাই স্কুলের শিক্ষককে চড় মারা হয়েছে! এটা লজ্জাজনক। আমরা রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ওনার পাশে দাঁড়াতে এসেছি। ওনাকে অফিসে ডেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে—বলছে কাজ ঠিকমতো না করলে এফআইআর করে দেবে। শিক্ষক আতঙ্কিত, কিছু বলতেও ভয় পাচ্ছেন। আমরা কমিশনকে জানাব। প্রয়োজনে ঘেরাও ও অবস্থান হবে।”
বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির দাবি, মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মীদের যথাযথ সম্মান, নিরাপত্তা ও মানসিক স্বস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একজন সরকারি শিক্ষককে অফিসিয়াল বৈঠকে শারীরিকভাবে অপমান করার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেই তাঁরা মনে করেন।
অন্যদিকে হুগলি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তরুণ কুমার ভট্টাচার্য জানান, “কি হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।” প্রশাসন ঘটনার বিস্তারিত জানতে তদন্ত শুরু করবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে স্থানীয় শিক্ষক মহল ও বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ও মহকুমা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছে। তাঁদের বক্তব্য, একজন শিক্ষক তথা সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীকে চড় মারার মতো ঘটনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে বিএলও-দের কাজ করার পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।













