Read More

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আবারো রাজ্যর মন্ত্রী: স্ত্রীর নামে অভিযোগ জমি ও ফ্ল্যাট কেনাবেচা, কোটি টাকার লেনদেনে নজর ইডির

  এষণা কুন্ডু,পলিটিক্যাল ডেস্ক:নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের কারা ও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে.....

State minister again in appointment corruption case: Wife accused of buying and selling land and flats, ED eyes crores of rupees in transactions
State minister again in appointment corruption case: Wife accused of buying and selling land and flats, ED eyes crores of rupees in transactions

 

এষণা কুন্ডু,পলিটিক্যাল ডেস্ক:নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের কারা ও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সম্প্রতি জমা দেওয়া ইডি-র চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, চন্দ্রনাথ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকা জমিয়েছেন। কিন্তু সেই টাকার উৎস সম্পর্কে কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি মন্ত্রী।

তদন্তকারীদের দাবি
তদন্তকারীরা দাবি করেছে সন্দেহজনক লেনদেনের খোঁজ মিলেছে ন’টি আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। ইডির সন্দেহ, ওই টাকা আসলে চাকরি বিক্রির মাধ্যমেই এসেছে। যদিও চন্দ্রনাথের বক্তব্য, কৃষিকাজ ও ব্যবসার আয়ে এই অর্থ জমা হয়েছে। তবে ইডি মনে করছে, কৃষি ও জমি কেনাবেচার ব্যবসাকে ব্যবহার করে অবৈধ টাকা বৈধ দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল।
চার্জশিটে উল্লেখ, বোলপুরের নায়েকপাড়ার বাড়ি থেকে ৪১ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও শান্তিনিকেতনের একটি জমি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ওই জমি কেনাবেচার মাধ্যমেও খাটানো হয়েছে।

এর আগে কুন্তল ঘোষের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ‘লাল খাতা’-তেও চন্দ্রনাথের নাম পাওয়া গিয়েছিল। অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের বয়ান অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ১৫৯ জন প্রার্থীর নাম পাঠিয়েছিলেন তিনি।

চন্দ্রনাথের স্ত্রী এর বিরুদ্ধে অভিযোগ
এই মামলায় চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে চন্দ্রনাথের স্ত্রী কুন্তলা সিংহের আয়কর রিটার্নে দেখা যায়, তিনি নোটবন্দির সময়ে একটি অ্যাকাউন্টে ৪৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা জমা করেছিলেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক নথি যাচাই করে দেখা যায়, সেখানে জমা হয়েছিল মাত্র ৭ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া বোলপুরের নায়েকপাড়ায় তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪১ লক্ষ টাকা নগদ। তবে কুন্তলার দাবি, ব্যবসা বা আয়কর সংক্রান্ত কোনও বিষয়েই তিনি অবগত ছিলেন না। সমস্ত হিসাবপত্র ও লেনদেন সামলাতেন স্বামী চন্দ্রনাথ।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত জুলাই মাসে দু’বার নথি জমা দেওয়ার নোটিশ পাঠানো হলেও চন্দ্রনাথ ইডির দফতরে হাজিরা দেননি। চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, নগদ টাকার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও লেনদেনের অসঙ্গতি থেকে স্পষ্ট, প্রকৃত উৎস গোপন করার চেষ্টা হয়েছে। ইডির বক্তব্য, ওই টাকা আসলে শিক্ষক নিয়োগের নামে অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষ।

ইডির তদন্তে উঠে এসেছে কুন্তলার নামে থাকা ব্যবসার খোঁজও। বিকাশ ভক্ত নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তিনি ‘বি কে কনস্ট্রাকশন’ নামে একটি সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন। বিকাশ ইডিকে দেওয়া বয়ানে দাবি করেছেন, ব্যবসার ‘ওয়ার্কিং পার্টনার’ ছিলেন তিনি নিজেই, কুন্তলা ছিলেন কেবল ‘স্লিপিং পার্টনার’। তাঁর কথায়, প্রথমে কুন্তলা ৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ৩.০২৫ কাঠা জমি কিনেছিলেন ওই সংস্থার নামে। তবে এখনও পর্যন্ত ‘বি কে কনস্ট্রাকশন’-এর নামে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি এবং বর্তমানে সংস্থাটি কার্যত নিষ্ক্রিয়।

শান্তিনিকেতনের জমি কেনাবেচার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে তদন্তে। চার্জশিট অনুসারে, ২০১৮ সালে শান্তিনিকেতন ট্যুরিস্ট লজের বিপরীতে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে একটি জমি কেনেন কুন্তলা। পরে বিকাশেরই আরেক সংস্থা ‘কেবিপি রিয়েলটি এলএলপি’ সেখানে একটি ছয়তলা ভবন তৈরি করে। ওই আবাসনে পাওয়া ১৯টি ফ্ল্যাট কুন্তলার নামে ছিল এবং সেগুলি বিক্রির ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ দেওয়া হয়েছিল বিকাশকে। বিকাশ ইডিকে জানিয়েছেন, ফ্ল্যাট বিক্রি করে তিনি কুন্তলাকে মোট ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ফেরত দেন।

শুধু তাই নয়, ২০২২ সালে কুন্তলার সঙ্গে আরও একটি আবাসন প্রকল্পে যুক্ত হন বিকাশ, যার কাজ এখনও চলছে। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, ২০২৩ সালে চন্দ্রনাথের দুই পুত্রের সঙ্গে বীরভূমের ইলামবাজার এলাকায় নতুন একটি প্রকল্পও শুরু হয়েছিল। প্রায় আট হাজার বর্গফুট জমিতে একটি ব্যবসায়িক ভবন তৈরি করে সেটি পরে ভাড়ায় দেওয়া হয়।

ইডির দাবি, এই সমস্ত জমি কেনাবেচা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ আসলে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ঘোরানোরই উপায়। নগদ টাকার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং আর্থিক নথিতে একাধিক অসঙ্গতি থেকেই বোঝা যায়, প্রকৃত উৎস আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, শিক্ষক নিয়োগের নামে অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষই এই সম্পদের মূল উৎস।

Thank You for Reading – Political Daily

Thank you for taking the time to read our news at Political Daily.
We appreciate your trust in our platform as your source for reliable and timely Indian news.Your support encourages us to continue delivering accurate, unbiased, and impactful stories that matter to you.

Stay informed. Stay connected.
– Political Daily