বিধানসভায় নজিরবিহীন অশান্তি, টানা গোলমালে শুভেন্দু-অগ্নিমিত্রা সহ একাধিক বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড

এষণা কুন্ডু,পলিটিক্যাল ডেস্ক: কলকাতা, ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিধানসভা রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা পরিণত হলো অগ্নিগর্ভ অঙ্গনে। বিরোধী ও.....

Unprecedented unrest in the Assembly, several BJP MLAs including Subhendu-Agnimitra suspended due to continuous uproar
Unprecedented unrest in the Assembly, several BJP MLAs including Subhendu-Agnimitra suspended due to continuous uproar

এষণা কুন্ডু,পলিটিক্যাল ডেস্ক: কলকাতা, ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিধানসভা রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা পরিণত হলো অগ্নিগর্ভ অঙ্গনে। বিরোধী ও শাসক দলের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা, স্লোগান, হাতাহাতির পরিস্থিতি এবং শেষমেশ একের পর এক বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন—সব মিলিয়ে নজিরবিহীন পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল রাজ্যবাসী। গোলমালের শুরু হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ড করা নিয়ে। সেই সিদ্ধান্তের পর থেকেই বিজেপি বিধায়করা তীব্র প্রতিবাদে সরব হন। চিৎকার স্লোগানে পুরো অধিবেশন অবশেষে অচল হয়ে পড়ে।

শুরু থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। স্পিকারকে ঘিরে স্লোগান চলাকালীন অগ্নমিত্রা পলের বক্তব্য শোনার অনুমতি দেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সময় ফুরিয়ে যাওয়ায় মূখ্যমন্ত্রী নিজের বক্তব্য শুরু করেন। বিজেপি বিধায়করা ফের চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। শঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা স্লোগান তোলেন, যার ফলে স্পিকার শঙ্কর ঘোষকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁকে যখন বিধানসভা কক্ষ থেকে নিরাপত্তারক্ষীরা বের করে দিচ্ছিলেন, তখন প্রায় হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। শাসক ও বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি স্লোগান, ঠেলাঠেলি এমনকি চড়চাপড়ের চেষ্টাও দেখা যায়।চড়-চাপড় এবং ‘চোর-চোর’ স্লোগানের মধ্যে আচমকাই বিজেপির বেঞ্চ থেকে ছুড়ে দেওয়া হয় একটি জলের বোতল।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ উগরে বলেন, “বিজেপি বাংলা-বিরোধী দল। এরা চায় না আমি বাংলার মানুষকে বাংলায় কথা বলি। এরা ভোটচোর, দুর্নীতিবাজ। বাংলার মানুষ আর বিশ্বাস করে না। বিধানসভায়ও এদের দিন শেষ।” তাঁর বক্তব্যের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এই অবস্থায় স্পিকার ও মুখ্যমন্ত্রী উভয়েই সকলকে শান্ত হতে অনুরোধ করেন। তৃণমূল বিধায়কেরা আসনে ফিরে গেলেও বিজেপি পক্ষ থেকে গোলমাল চলতে থাকে। শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভায় সাসপেনশন নিয়ে ফের চিৎকার শুরু হয় অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে। সেনাবাহিনীকে সম্মান জানানোর প্রসঙ্গ টানতেই তিনি সাসপেন্ড হন বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। অভিযোগ আরও গুরুতর রূপ নেয় যখন বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক স্পিকারের টেবিলের দিকে জলের বোতল দেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় অগ্নিমিত্রা পলকেও সাসপেন্ড করা হয়। বিধানসভা প্রাঙ্গন থেকে তাঁকে মহিলা নিরাপত্তাকর্মীদের সাহায্যে বের করে দেওয়া হয়। এর পরেও গোলমাল অব্যাহত থাকে। বিজেপির অভিযোগ,সরকারের নির্দেশে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে, সরকার বাকস্বাধীনতা রোধ করছে।অন্যদিকে শাসক পক্ষের দাবি, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বিধানসভার পরিবেশ নষ্ট করছে।

দিনভর এই গোলমালের জেরে কার্যত ভেস্তে যায় বিধানসভার অধিবেশন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বিজেপি বেঞ্চ থেকে টানা স্লোগান ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ফলে কাজকর্ম অচল হয়ে পড়ে।

বিরোধীদের অভিযোগ
গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে গেলেই শাস্তি পেতে হচ্ছে।
এমনকি সেনাবাহিনীকে সম্মান জানানোর মতো ইস্যুতেও সাসপেনশন হচ্ছে।এভাবে বিরোধীদের কণ্ঠ বন্ধ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তাঁরা।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এ দিনের ঘটনা বাংলার রাজনৈতিক উত্তেজনার এক বড় প্রতিফলন। একপক্ষ বলছেন বিজেপি নাটক করছে জনমত ঘোরাতে।অন্য পক্ষের দাবি, সরকার গণতন্ত্রের অপমান করছে।এই নজিরবিহীন অশান্তি রাজ্যের সংসদীয় সংস্কৃতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলল।

নজিরবিহীন এই অশান্তি রাজ্যের সংসদীয় সংস্কৃতিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল। আগামী দিনে এই ঘটনার প্রভাব কতটা গভীর হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

Thank You for Reading – Political Daily

Thank you for taking the time to read our news at Political Daily.
We appreciate your trust in our platform as your source for reliable and timely Indian news.Your support encourages us to continue delivering accurate, unbiased, and impactful stories that matter to you.

Stay informed. Stay connected.
– Political Daily